১. সারফেস ওয়েবঃ

    সারফেস ওয়েব ইন্টারনেটের একমাত্র দৃশ্যমান অংশ। সারফেস ওয়েবের ওয়েবসাইট সাধারণ সার্চ ইঞ্জিনেই খুঁজে পাওয়া যায়। আমরা স্বাভাবিক ভাবে যে ওয়েবসাইট ব্যবহার করছি তাই সারফেস ওয়েব। সারফেস ওয়েব ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের একটি ছোট অংশ এবং এটি জনসাধারণের জন্য একমাত্র অ্যাক্সেস যোগ্য অংশ। গুগল, ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার ইত্যাদি ওয়েবসাইট সাধারণ সারফেস ওয়েবের অন্তর্ভুক্ত। এসব ওয়েবসাইটে অ্যাক্সেস বা প্রবেশ করতে, কোন বিশেষ কনফিগারেশন প্রয়োজন নেই। সারফেস ওয়েব World Wide Web এর মাত্র ৪%।

    ২. ডীপ ওয়েবঃ

    ডীপ ওয়েব World Wide Web এর অদৃশ্য একটি অংশ। তাই এটি লুকানো ওয়েব হিসাবেও পরিচিত। ডীপ ওয়েবের সাইট গুগলের মত সাধারণ সার্চ ইঞ্জিনে খুঁজে পাওয়া যায় না। ডীপ ওয়েবটি সারফেস ওয়েবের বিপরীতে, কারণ এটি জনসাধারণের অ্যাক্সেস যোগ্য নয়। ডীপ ওয়েব সাধারণত Banking, Cloud , সরকারী তথ্য, Webmail বা অন্যান্য পেমেন্ট পরিষেবা দির জন্য ব্যবহার করে। ডীপ ওয়েব বা লুকানো ওয়েব HTTPS প্রোটোকলের পিছনে লুকানো। ডীপ ওয়েবে প্রবেশ করতে আইপি ঠিকানা বা সরাসরি URL প্রয়োজন, কিছু ক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড বা অন্যান্য সিকিউরিটি থাকতে পারে।

    ৩. ডার্ক ওয়েবঃ

    ডার্ক ওয়েব ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের একটি অংশ এবং এটি ওয়েবে অদৃশ্য থাকে। ভিজিটর বা ওয়েবসাইট এডমিনদের ওয়েব অ্যাক্সেসের জন্য আলাদা সফটওয়্যার বা কনফিগারেশনের প্রয়োজন। টর ব্রাউজার ডার্ক ওয়েব অ্যাক্সেস করার জনপ্রিয় সফটওয়্যার। টর ব্রাউজারের মাধ্যমে এসব ওয়েব ওয়েবসাইট অ্যাক্সেস করা যায়। ডার্ক ওয়েব ওয়েবসাইটের ডোমেইন সাধারণত .onion থাকে।
    ডার্ক ওয়েবে অবৈধ কার্যকলাপ, জুয়া, ড্রাগ, অস্ত্রসহ সব ধরনের খারাপ কার্যক্রম হয়ে থাকে। বিট কয়েনের মত Cryptocurrency ব্যবহার করে লেনদেনের সংঘটিত হয়।বেশিরভাগ হ্যাকার ডীপ ওয়েব এবং ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। মোট ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের ৯৬% ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করে।

    ৪.মারিয়ানা`স ওয়েবঃ

    পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর ওয়েব হলো মারিয়ানা'স ওয়েব, আর এটা তখনই তা ব্রাউজ করা যাবে যখন সেই ওয়েবসাইট এর ঠিকানা আপনার কাছে থাকবে আরও থাকতে হবে সেই ওয়েবসাইটে ঢোকার সিক্রেট কি / পাসোয়ার্ড । মারিয়ানা`স ওয়েব এতই গভীর যে এখানে ঢোকা সহজ কোন ব্যাপার নয়, খুবই কঠিন একটি প্রক্রিয়া। যেকেউ চাইলে প্রবেশ করতে পারবে না এই ইন্টারনেটের অন্ধকার জগতে। এই মারিয়ানা নামটি এসেছে মানিয়ানা ট্রেঞ্জ থেকে। এই মারিয়ানা ট্রেঞ্জ হল সমুদ্রের এমন একটি স্থান যা পুরো পৃথিবীর সবচাইতে গভীরতম স্থান। এই নাম থেকেই এর নাম হয়েছে মারিয়ানা`স ওয়েব। সরকারের যতসব টপ সিক্রেট তথ্যগুলো আছে তা এখানে পাওয়া যায়। দুনিয়ায় সবচেয়ে রহস্যময় আর গোপনীয় কোন জিনিস যদি থাকে তবে সেসব এখানে পাওয়া যায়। আরও বলা হয় যে, "এটলান্টিস" সমুদ্রের নিচে এক কাল্পনিক দ্বীপ যেটি আছে, তার তথ্যও এই মারিয়ানা`স ওয়েবে আছে। এছাড়াও ইলুমিনাটি সহ অন্য সিক্রেট সোসাইটির লোকদের সাথে যোগাযোগ করা যায়। তাই এই মারিয়ানা`স ওয়েব হল ইন্টারনেটের সবচেয়ে রহস্যময় ও গোপনীয় জায়গা এবং এর চাইতে রহস্যময় ও গোপনীয় ওয়েব আর নেই।
    এখানে সাধারন কোন এথিক্যাল বা হোয়াইট হ্যাট হ্যাকারের কোন স্থান নেই। একজন সাধারন মানুষের মারিয়ানা`স ওয়েবে বেশি ঘাটাঘাটি বা ঢোকার চেষ্টা না করা এবং এসবের ভেতর না যাওয়াই ভালো কারণ সাধারণ মানুষের কাজের কোনও কিছুও নেই। আর এসব কারনের জন্যই কেউ মারিয়ানা`স ওয়েব প্রকাশের জন্য কোন অভিযান করে না। সরকারের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপও নেওয়া হয় না। কেননা সরকারের অনেক গোপন তথ্য এখানে বিদ্যমান থাকে। বড় থেকে বড় হ্যাকারও এই মারিয়ানা`স ওয়েব নিয়ে কিছু করার আগে অনেকবার ভাবে। এটি ইন্টারনেটের একটি জায়গা যেখানে বিনা ঠিকানা, বিনা কি/ পাসওয়ার্ড এ প্রবেশ অসম্ভব এটি ব্যাপার। মারিয়ানা`স ওয়েবে ঢুকতে সুপার কম্পিউটার এর প্রয়োজন হবে। এদের প্রোসেসিং স্পীড আমাদের সাধারন কম্পিউটার থেকে কয়েক হাজার গুণ বেশী হবে। মানা হয় মাত্র ৪টি সুপার কম্পিউটার বা কোয়ান্টাম কম্পিউটার দিয়ে সম্পূর্ণ আমেরিকার কম্পিউটার এর চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।

    পরের পার্ট এ অ্যানোনিমাস এবং টর ব্রাওজার সর্ম্পর্কে জানতে পারবেন।।

    ক্রেডিটঃ প্রেয়াংশু বিশ্বাস ঋত্বিক😎😎